৬ দফা আল্টিমেটাম দিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়োগবঞ্চিত সহকারী শিক্ষকদের

বাংলা ডেস্ক: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও নিয়োগ না পাওয়ার প্রতিবাদে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপের নিয়োগপ্রত্যাশীরা। দিনভর পুলিশের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির পর দাবির পক্ষে তারা ছয় দফা আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তালুকদার গিয়াস নামে এক নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকদের পক্ষে এই আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন।

তাদের আল্টিমেটামগুলো হলো– দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া; বিনা কারণে আটক করা শিক্ষকদের মুক্তি দিতে হবে এবং পুরুষ পুলিশ সদস্যদের নারী শিক্ষকদের গায়ে হাত দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানো; পুলিশি হামলায় আহত শিক্ষকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; সরকার সুপারিশের পরও শিক্ষকদের রক্তাক্ত করার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে এবং অবৈধভাবে নিয়োগ স্থগিতের এই রায় বাতিল করে তাদের যোগদান নিশ্চিত করতে হবে।

তালুকদার গিয়াস বলেন, ‘আমাদের অনেকেই অন্য চাকরি এমনকি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছে এই নিয়োগের জন্য। এখন অনেকের বয়সও শেষ। এই অবস্থায় আমাদের নিয়োগ বাতিল আমাদের সঙ্গে প্রহসন।’

আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বঞ্চিতরা জানান, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ নিয়ে চলছে টালবাহানা।’

তারা বলেন, তৃতীয় ধাপের ২০২৩ সালের ১৪ জুনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২৪ সালের ২৯ মার্চে। এর ফল প্রকাশ করা হয় ২১ এপ্রিল এবং ১২ জুন ভাইভা সম্পন্ন হয়। পরবর্তী সমেয় আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হন।

তারা আরও বলেন, যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি, তাদের মধ্যে ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়।

নিয়োগ বঞ্চিতরা বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি প্রাইমারি ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়ের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দল দেখা করে। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষকের মধ্যে সবার নিয়োগ চূড়ান্ত হবে, কেউ বাদ যাবে না। কিন্তু ইতোমধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে সাতটি শুনানির পর চূড়ান্ত বিচারে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

তারও আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial