নাঈমের সেঞ্চুরির পর মুশফিকের তোপে উড়ে গেলো রংপুর

টানা ৮ ম্যাচ জেতা রংপুর রাইডার্স পরপর চারটি ম্যাচে হেরে গেলো। সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করা দলটি প্রথম কোয়ালিফায়ারে এক পা দিয়ে রেখেছিল। তবে ১২ ম্যাচ শেষে এখন তাদের শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিয়ে শঙ্কা উঠেছে। বৃহস্পতিবার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের কাছে ৪৬ রানে হেরেছে রংপুর। চিটাগং কিংস নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচ জিতে গেলে শীর্ষ দুইয়ে থাকার সুযোগ হারাবে নুরুল হাসান সোহানের দল। সবমিলিয়ে তাই কঠিন চাপেই দলটি। বৃহস্পতিবার আগে ব্যাটিং করে খুলনা নাঈম শেখের সেঞ্চুরিতে ২২১ রানের লক্ষ্য দেয় রংপুরকে। কঠিন সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে মুশফিক হাসানের গতির কাছে পরাস্ত হয়ে ১৭৪ রানে থামে গতবারের রানার্সআপরা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেমে খুলনা ২২০ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। জবাবে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার তৌফিক খানকে (৯) হারায় রংপুর। এরপর সাইফ হাসান (৬) ও ইফতেখার আহমেদ (১৯) দ্রুত বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় তারা। সৌম্য ও শেখ মেহেদী হাসান মিলে ম্যাচটা ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ২৩ বলে ৩৬ রানের জুটির পর মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মেহেদী। ওই ওভারের লম্বা শট খেলতে গিয়ে বাউন্ডারিতে তালুবন্দি হন অধিনায়ক সোহান। তখনও ক্রিজে আকড়ে ব্যাটিং করতে থাকেন সৌম্য। কিন্তু তার একার লড়াই যথেষ্ট ছিল না। ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শেষ ব্যাটার হিসেবে সৌম্য আউট হতেই ৪৬ রানের জয় নিশ্চিত করে ফেলে খুলনা। ৪৮ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার পর আগের দুই ম্যাচে রান করতে না পারলে আজ নিজেকে ফিরে পেয়েছেন সৌম্য। যোগ্য সঙ্গীর অভাবে তার ইনিংসের গুরুত্ব হারিয়েছে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রানে থামে রংপুরের ইনিংস।
খুলনার বোলারদের মধ্যে মুশফিক সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন। গত বছর মে মাসে সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেছিলেন এই পেসার। সম্প্রতি খুলনার তাঁবুতে যুক্ত হয়ে আজই প্রথমবার মাঠে নেমেই সাফল্য পেলেন তিনি। ২৪ রান খরচায় তার শিকার তিনটি উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ নওয়াজ দুটি এবং হাসান মাহমুদ ও নাসুম আহমেদ প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় খুলনা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে ইনিংস উদ্বোধন করা মেহেদী হাসান মিরাজ সাজঘরে ফেরেন। দারুণ ব্যাটিং করা এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ১২ বলে ২১ রান করে। এরপর অ্যালেক্স রস রান আউটে কাটা পড়েন। তৃতীয় উইকেটে উইলিয়াম বোসিস্টোকে সঙ্গে নিয়ে নাঈম শেখ প্রতিরোধ গড়েন। তাদের ৪৭ বলে ৮৮ রানের জুটির ওপর দাঁড়িয়ে বড় সংগ্রহের পথটা পেয়ে যায় খুলনা। উইলয়াম ২১ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করে গেছেন নাঈম। চতুর্থ উইকেটে নাঈম ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন হয়ে উঠেন আরও ভয়ঙ্কর। ৩২ বলে ৭০ রানের জুটি খুলনার ইনিংসকে ২২০ রানে নিয়ে যায়। ইনিংস শেষ হওয়ার দুই বল আগে অঙ্কন আউট হন। তার আগে ১৫ বলে খেলেন ২৯ রানের ইনিংস।
নাঈম পেয়ে যান স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেরে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তিনি। আজকে পেলেন রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। এদিন ১১১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। চলতি আসরে এটি অষ্টম সেঞ্চুরি। সবমিলিয়ে ৬২ বলে ৭ চার ও ৮ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান নাঈম। তার এই ইনিংসের ওপর দাঁড়িয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২০ রান করে খুলনা।
রংপুরের বোলারদের মধ্যে আকিফ জাবেদ, শেখ মেহেদী হাসান ও ইফতেখার আহমেদ প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial